ছোটো গল্প
FREE SHIPPING IN INDIA
ছোটো গল্প
নন্দন কতক্ষণ ঘুমিয়েছে ঠিক জানে না। চোখ মেলে দেখে শয়ে শয়ে চোখ তার মুখের দিকে ঝুঁকে আছে। সে ধড়মড় করে উঠে বসে। কারা এরা? সে-প্রশ্ন করার আগেই সমস্বরে বলে ওঠে ওরা, “আমরা কুসুমপুরের প্রজা সব। বড়ো বিপদ আমাদের কর্তা। কোনও রাজা আমাদের দায়িত্ব নেয় না। আমাদের ফসল কেনাবেচা হয় না। আমাদের অর্থ নেই, খাদ্য নেই, শিক্ষার মন্দিরটিও বন্ধ।”
সহেলী রায়
“গেরাম চাই গো, গেরাম! গেরাম চাই-ই-ই!”
হাঁকডাক শুনে নন্দন আর ঘুমিয়ে থাকতে পারল না। চোখ মেলে উঠে বসল। দোর খুলে উঠোনে এসে দাঁড়াতেই মেঠো রাস্তা পেরিয়ে সবুজ ধানিজমিগুলো দুলে দুলে নন্দনকে স্বাগত জানাল। মাঠের শেষ প্রান্তের আকাশ তখন লাল। সূর্যও যেন নন্দনের মতো চোখ খুলছে, মুদছে। উঠি উঠি করেও ফের পাশ ফিরে শুয়ে মেঘ টেনে নিচ্ছে গায়ে।
আওয়াজটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে নন্দনের খড়চালার ঘরের বামদিকের বাঁক থেকে।— “গেরাম নেবে গো, গেরাম!”
এ আবার কেমন ফেরি? গ্রাম আবার বিক্রি হয় নাকি? বেচেই-বা কারা, কেনেই-বা কারা? ভারি কৌতূহল হল তার। নন্দনের বাবা, মা, ভাই তখনও ঘুমিয়ে। প্রহর দেখে ঠাহর হচ্ছে, ভালো করে ভোরের কচি মুখে বুলি ফোটেনি। এমন ভোররাতে আধো আলোতে কেউ আবার ফেরি করে নাকি? অতশত নানা প্রশ্ন নিয়ে নন্দন উঠোন পেরিয়ে এসে দাঁড়াল। ঠিক তখনই লোকটি হুশ করে নন্দনের একেবারে কাছে চলে এল। যেন কোন যাদুকরের ভোজবাজি। অথচ তার ডাক শুনে মালুম হচ্ছিল এখনও সে বেশ খানিক দূরে। নন্দন অবাক। লোকটির মুখখানা অসম্ভব কালো হলেও চোখের সাদা অংশটি দারুণ উজ্জ্বল। যেন কয়েকশো চাঁদের জ্যোৎস্না এসে জমা হয়েছে অক্ষিগোলকে। তার রশ্মি ঠিকরে পড়ছে পথে, মাঠে। লোকটির পরনে সাদা খাটো ধুতি, গায়ে ময়লা আলোয়ান জড়ানো, মাথায় পাগড়ি, গলায় কিছু ঝুটো মুক্তোর মালা। ঠিক যেমন রাজ-পেয়াদাদের গলায় থাকে। মাথায় একটা গোল ঝুড়ি। নন্দন চিন্তায় পড়ল। রাজা আবার ছলেবলে পেয়াদা পাঠাল না তো? কিন্তু কোন রাজ্যের রাজা? নন্দনদের গ্রাম গোপালপুর দুটি রাজ্যের সংযোগস্থলে অবস্থিত। দুই রাজাই দাবি করেন, গোপালপুর তাঁদের অংশ। পেয়াদারা যখন-তখন এসে নানা হাঙ্গামা চালায়। জমির খাজনাও পাঠাতে হয় দুই রাজাকে। এই নিয়ে নানা অসন্তোষ লেগেই আছে গোপালপুরে। অর্থকষ্টের শেষ নেই। নন্দন দু-পা পিছোল। ফেরিওয়ালার মতলব কী?
“গেরাম নেবেন বাবু?”
নন্দনের মনটা চনমন করছে। এমন সম্মান আগে পায়নি সে, সে বয়সও তার হয়নি। একবার সাহস করে জিজ্ঞেস করবে নাকি?
“গ্রাম? তা আবার কেমন করে হয়?”
নন্দনের গলায় আশ্বাসের সুর শুনে লোকটি মাথা থেকে ঝুড়িটি নামিয়ে আনে।— “বলছি বাবু, দু-দণ্ড সবুর করেন।”
নন্দন একটু লজ্জা পায়।— “আমার বয়েস মাত্র দ্বাদশ। এই সবে পঞ্চম ভাগ চলছে পাঠশালায়।” নন্দন এই সম্মানের যোগ্য কি না পরখ করে নিতে চাইল।
“সে হোক গে’ বাবু, আপনি তো কুমার, আপনাকে এ-ডাক মানায়।”
এত হেঁয়ালি নন্দনে মাথায় ঢোকে না।
“তা কী আছে ওই ঝুড়িতে?” নন্দন কৌতূহলী হয়।
“গ্রাম। দেখবেন?”
লোকটি তার ঝুড়িতে রাখা একটি পুঁটুলি ধীরে ধীরে খোলে। নন্দন নিষ্পলকে তাকিয়ে থাকে। ঝুড়ির ভেতর থেকে লোকটি একটি আয়না বের করে। সেটি আলোয়ানের কোনা দিয়ে ভালো করে মুছে দু-বার হাত বোলায়।
“আসুন বাবু, দেখুন।”
লোকটি নির্ঘাত ঠগবাজ। আয়নার ভেতর একটা গোটা গ্রাম কী করে থাকে? নিজের প্রতিবিম্ব ছাড়া কী আর দেখতে পাবে সে? নন্দনের ভারি রাগ হয়।
“ভয় পাবেন না বাবু, একেবারেই ঠকবেন না।”
সর্বনাশ! লোকটা মনের কথা পড়তে পারে নাকি? দোনোমনা করতে করতে আয়নাটির ওপর ঝুঁকে পড়ে সে।
এ কি! কী দেখছে সে? ঢলঢলে একটি পুকুর, শ্যাওলারঙা জলে লাল-নীল মাছেরা হেসেখেলে বেড়াচ্ছে, বড়ো বড়ো তালগাছেরা জড়িয়ে আছে একে অপরকে। আয়নাটি একটু একটু করে ঘোরাচ্ছে লোকটি। ছোটো ছোটো কুঁড়েঘর। জমির আলপথ বেয়ে ছেলেমেয়েরা হেঁটে যাচ্ছে। এক ঝাঁক বক উড়ে যাচ্ছে আকাশে।
নন্দনের চোখ বিস্ফারিত। মুখে কথা সরছে না আর।
তার চেহারা ও ভাবগতিক দেখে লোকটি হেসে ওঠে।— “আরে আরে বাবু, বিচলিত হবেন না, আরও আছে গেরাম, পছন্দ করে নেন দেখি।”
পুটুলি থেকে সে দ্বিতীয় একটি আয়না বের করে এবং একইভাবে আগেরটির মতো আলোয়ানের কোনায় মুছে সে নন্দনের সামনে মেলে ধরে। নন্দন দেখে, একটি খোলা মাঠে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই জমায়েত হয়ে আছে, সামনে বিশাল একটি প্রাসাদোপম বাড়ি। চইচই আওয়াজ করে হাঁস হেঁটে বেড়াচ্ছে। আগুনের লেলিহান শিখা দুলছে, পুথির পাতা উড়ে যাচ্ছে, বৃষ্টি মাথায় করে একে অপরকে আলিঙ্গন করছে— বড়ো বিচিত্রসব দৃশ্য। এত মানুষ কেন ওখানে? নন্দনের মাথায় জিজ্ঞাসা চিহ্নেরা রাজবাড়ির পুজোর মাঠের মেলার মতো বসে যায়। সেই সঙ্গে কিছু ভাবনাও পাখা মেলতে থাকে। নন্দন জানে, যে-রাজা যত গ্রাম বা নগরের অধিকারী, সে-রাজা তত শক্তিশালী। গোপালপুর দুই রাজার কাড়াকাড়ির সংসারে বড়োই বিপন্ন। নন্দন যদি সত্যি একটা একটা করে বেশ কিছু গ্রামের মালিকানা পায়, তাহলে সেও রাজা হয়ে উঠবে। তার পৃথক রাজ্য হবে। গোপালপুরের দুঃখ ঘুচবে।
“কিন্তু আমার কাছে যে একটিও মুদ্রা নেই!” নন্দন মুষড়ে পড়ে।
“ও নিয়ে চিন্তা নেই বাবু, আপনি আমায় সঙ্গে নিন, আমি বরং আপনার মন্ত্রী হই, আপনি যা পারিশ্রমিক দেবেন সেই দিয়েই না-হয় বেচাকেনা সাঙ্গ হবে।”
নন্দনের উপায়টুকু শুনে খুশির বদলে ভাবনাই হল বেশি। সে যে রাজা হতে চায়, এ-কথা লোকটি জানল কী করে? না-ই যদি জানে, তাহলে মন্ত্রী হবার বাসনা কীভাবে প্রকাশ করে? লোকটি জিন-টিন নয়তো? তবে ওই দ্বিতীয় গ্রামটি নিয়ে তার মনে প্রশ্নের ঝড় চলতেই থাকে।
“ওই বড়ো প্রাসাদটি কার?” নন্দন আর চেপে রাখতে পারে না নিজের কৌতূহল।
এইবার লোকটিকে সামান্য বিমর্ষ দেখায়।— “কুসুমপুর। এ-রাজ্যের জ্ঞান, শিক্ষার ভাণ্ডার ওই কুসুমপুর। গ্রামের কিছু বিদ্বজ্জনেরা ওই বৃহৎ বিদ্যালয় তৈরি করেছেন শিক্ষে বিতরণের আশায়। ভিনদেশের বহু মানুষ আসতেন সেখানে পাঠ নিতে।”
এটুকু শুনেই নন্দন উৎসুক হয়ে ওঠে।— “আমি তবে কুসুমপুরই নেব। আপনি ব্যবস্থা করুন।”
নন্দনের মাথায় বুদ্ধির বাতাস সরষে ক্ষেতের মতো ঢেউ খেলে যায়। সে জানে, শিক্ষা মানুষের পরম শক্তি। সেই শক্তির মাধ্যমে সে অনায়াসেই একাধিক গ্রাম, নগরের অধিপতি হয়ে উঠবে। গোপালপুর যে দুই রাজ্যের সংযোগস্থলে শ্বাসরোধ করে আছে, সেই দুই রাজাকেও পরাজিত করতে পারবে।
এসব কথা ভাবতে-ভাবতেই সে দেখে, লোকটি যেমনভাবে হঠাৎ উদয় হয়েছিল ঠিক তেমনভাবেই মিলিয়ে গেছে।
মেঘের আড়াল সরিয়ে ফোঁটা ফোঁটা কিরণের ছটা নেমে আসছে শস্যভূমিতে। কৃষকের দল একে একে রওনা দিচ্ছে সোনালি ক্ষেতের অভিমুখে। গোপালপুর জাগছে প্রতিদিনের মতো।
॥ ২॥
নন্দন পাঠশালার পাঠ শেষ করে অরণ্যের দিকে গেল জ্বালানি সংগ্রহের আশায়। মন তার ভারি উদাস। সেই গ্রাম বিক্রেতা কোথায় যে উধাও হয়ে গেল! সবই নিয়তি।
“আমায় স্মরণ করলেন বাবু? এই যে আমি এখেনে।”
নন্দন চমকে ওঠে। একটি প্রকাণ্ড গাছের নীচে লোকটি তার ঝুড়িতে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে। এত বড়ো মানুষ ওই ঝুড়িতে কীভাবে এঁটে গেল কে জানে!
নন্দন গলা ঝেড়ে বলল, “আমি কুসুমপুর কিনব। আপনি যে উধাও হয়ে গেলেন!”
লোকটি এবার ঝুড়ি থেকে বেরোল।— “উধাও হব কী বাবু, আমি তো গ্রামে খবর দিতে গেছিলাম। সব ব্যবস্থা হয়েছে। এবার তাহলে চলেন আমার সঙ্গে।”
নন্দনের সামান্য বুক ঢিপঢিপ করে। সে কোনোদিন তার বাবা-মাকে ছেড়ে কোথাও যায়নি দূরে। কিন্তু গোপালপুরকে বাঁচাতে হবে, তাকে সাহসীও হতে হবে। সে বলে, “চলুন তবে।”
লোকটি নন্দনকে তার ঝুড়িতে ইশারায় বসতে বলে। নন্দন ভয়ে ভয়ে উঠে বসে ঝুড়িটির ওপর। হাউইয়ের মতো উড়তে থাকে ঝুড়িটি। নন্দন সন্তর্পণে নীচের দিকে তাকিয়ে দেখে, লোকটি ঠিক ঝুড়ির তলাতেই হাঁটছে। নন্দনের বুক শুকিয়ে আসে। সে ভয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
নন্দন কতক্ষণ ঘুমিয়েছে ঠিক জানে না। চোখ মেলে দেখে শয়ে শয়ে চোখ তার মুখের দিকে ঝুঁকে আছে। সে ধড়মড় করে উঠে বসে। কারা এরা? সে-প্রশ্ন করার আগেই সমস্বরে বলে ওঠে ওরা, “আমরা কুসুমপুরের প্রজা সব। বড়ো বিপদ আমাদের কর্তা। কোনও রাজা আমাদের দায়িত্ব নেয় না। আমাদের ফসল কেনাবেচা হয় না। আমাদের অর্থ নেই, খাদ্য নেই, শিক্ষার মন্দিরটিও বন্ধ।”
নন্দন অবাক হয়। তবে যে লোকটি ভারি প্রশংসা করল গ্রামটির! সে ঠিকই ভেবেছে, লোকটি আসলে ঠগবাজ। নন্দন ঘুরে ঘুরে দেখল, লোকটিকে কোথাও আর দেখাও যাচ্ছে না। সে মনে মনে সাহস সঞ্চয় করে, জানতে চায়, কীসের বিপদ। কোনও জবাব আসার আগেই দেখে বিশাল বিদ্যালয়টি যেন এক পা এগিয়ে এল। সকলেই ভয়ার্ত এক শব্দ করে পিছিয়ে গেল। তবে সবচাইতে বেশি ভয় পেল নন্দন। অন্যান্যদের বরং দৃশ্যটিতে অভ্যস্ত মনে হল।
“দেখলেন কর্তা? আমাদের এই বিদ্যামন্দিরটি দৈত্যের মতো আচরণ করছে। এক পা এক পা করে এগিয়ে এসে আমাদের বাসস্থান, চাষের জমি সবটাই গিলে ফেলছে।”
সারাদিন, সারারাত সকলেই হাঁ করে তাকিয়ে আছে ভবনটির দিকে। চোখের পলক ফেললেই পাছে কোন অঘটন ঘটে যায়।
সন্ধে গড়িয়ে রাত হয়। নন্দন উঠে দাঁড়ায়। চাঁদের আলোয় বাড়িটি জ্বলজ্বল করছে। সে এসে প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়াতেই খানিক ধূসর ছাইভস্ম উড়ে আসে। কিন্তু সে-সব নন্দনকে স্পর্শ করার আগেই সে ছুটে পালায়। মাঠে বসে থাকা মানুষদের গায়ে সেই ভস্ম স্পর্শ করতেই সব একে একে ঘুমে ঢলে পড়ে ওরা। সবাইকে জ্ঞান হারাতে দেখে নন্দন দুশ্চিন্তায় পড়ে। সে এগোতে থাকে। ফটক পেরিয়ে বিশাল এক উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে সে আসে। প্রাঙ্গণটির চারপাশে থরে থরে কক্ষ। প্রাঙ্গণের ঠিক মাঝখানে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে, সেখান থেকেই ছাই উড়ছে। নন্দন সাবধানে দূরে দূরে হাঁটতে লাগল, যাতে ভস্ম উড়ে তার গায়ে না পড়ে। নন্দনের মনে হল এটি কোনও ইমারত নয় আসলে, এক বিরাট দৈত্য দাঁড়িয়ে আছে হাত-পা মেলে। বাড়িটি যেন দুলে উঠছে। ফোঁস ফোঁস শব্দ আসছে কানে, গরম হাওয়া বইছে।
নন্দনের মনে পড়ে গেল, সে আয়নায় দেখেছিল এই অগ্নিশিখা। তাহলে পুথি? কোথায় সে পুথি? নন্দন প্রাণপণে খুঁজতে লাগল। চারদিকে এমন ধোঁয়া, নন্দনের দম বন্ধ প্রায়, তবু সে হাল ছাড়বে না প্রতিজ্ঞা করল। সে এগিয়ে গেল আগুনের কুণ্ডটির দিকে। খানিক তাকিয়ে থাকার পর দেখতে পেল, আগুনের লম্বা শিখাটির ওপর দুটি পুথির পাতা প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াচ্ছে। নন্দন ছুটে আবার বাইরে আসে। একে একে সবাইকে জাগাতে থাকে। সবাইকে আশ্বস্ত করে, এ বিপদ থেকে তারা শীঘ্রই মুক্তি পাবে। নন্দন তাদের বিদ্যালয়ের প্রাচীরের কাছে নিয়ে আসে। বলে, একে অপরের পিঠের ওপর উঠে এই প্রাচীরের চেয়েও বড়ো প্রাচীর তৈরি করতে। কুসুমপুরের বাসিন্দারা মানব প্রাচীর তৈরি করতে সক্ষম হলে নন্দন পিঠ বেয়ে সেই প্রাচীরের ওপর উঠে সামান্য লাফেই ধরে ফেলে সেই পুথির পাতা দুটি। ভয়ানক মেঘের গর্জন হয়। সঙ্গে একটা গোঙানির শব্দ। টুকরো টুকরো যে কথাগুলি শোনা যাচ্ছে তার ভাষা বোঝা দুষ্কর। বিদ্যার জাহাজটি ভয়ানক দুলতে থাকে। অক্ষরগুলি বাতাসে ভাসতে থাকে। নন্দন তার ছোটো ছোটো আঙুলের রেখায় সেগুলি একত্রিত করার চেষ্টা করে। এরপরই একটি গমগমে কণ্ঠস্বর ভেসে আসে। এক মহামুনি এই ভবনে বসে এই পুথি রচনা করছিলেন, সেই সময়ই এক ভিনদেশি ছাত্র পুথিটি চুরি করে পালাতে গিয়ে মহামুনির অভিশাপে অগ্নিদগ্ধ হয়। মুনি তার আত্মাকেও আটকে রাখেন ওই অগ্নিশিখার মাথায়। আত্মার ছটফটানি কুসুমপুরে নিয়ে আসে এই বিপদের কালো ছায়া।— ‘এ অক্ষরে লেগে আছে লোভ, প্রতিহিংসার ছোঁয়া। একমাত্র কোনও নিষ্পাপ শক্তিই পারে ওই দুষ্ট চিন্তাকে মুক্তি দিতে।’
নন্দন জড়ো হওয়া শব্দগুলোকে যত্ন করে পুথির পাতায় সাজিয়ে দেয়। শিক্ষাভবনটি ধীরে ধীরে স্থির হয়ে যায়। আগুনের শিখাটি নিভে যেতে থাকে। সবাই দেখল, একটা কালো ধোঁয়া অবয়ব ধারণ করে উড়তে উড়তে আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে।
নন্দনই তাদের কুসুমকুমার। তার নিষ্পাপ স্পর্শেই মুক্তি পেল অভিশপ্ত আত্মা। কুসুমকুমারের প্রজারা শিউলি ফুলের মতো ঝরে পড়া বৃষ্টিতে একে অপরকে আলিঙ্গন করে অভিবাদন জানাচ্ছে।
শ্বেতপদ্মের মতো এক ঋষি এগিয়ে এসে নন্দনকে আশীর্বাদ করলেন। তাঁর চোখের জ্যোতিতে সেই জ্যোৎস্না, গলায় ঝুটো মুক্তোর মালা। দূর থেকে সুর ভেসে আসছে— ‘গেরাম নেবে গো, গেরাম?’
কিশোর ঘোষাল ▪ পুষ্পেন মণ্ডল ▪ রঞ্জন দাশগুপ্ত ▪ শাশ্বত কর
শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য ▪ দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য ▪ মৌসুমী রায় ▪ অদিতি ভট্টাচার্য ▪ অভিষেক ঘোষ ▪ সুস্মিতা কুণ্ডু ▪ সবিতা বিশ্বাস ▪ বুমা ব্যানার্জী দাস ▪ শংকর লাল সরকার ▪ বাণীব্রত গোস্বামী ▪ সহেলী রায় ▪ অমিয় আদক ▪ সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত ▪ সুতপা সোহহং
বদ্রীনাথ পাল ▪ শ্যামাচরণ কর্মকার ▪ দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী ▪ স্বপন কুমার বিজলী ▪ সুব্রত দাস ▪ অর্ণব ভট্টাচার্য ▪ সুজাতা চ্যাটার্জী ▪ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস ▪ মধুমিতা ভট্টাচার্য ▪ কণিকা দাস ▪ সৌমেন দাস ▪ নীলেশ নন্দী
রম্যাণী গোস্বামী ▪ দীপঙ্কর চৌধুরী ▪ বিশ্বদীপ সেনশর্মা ▪ রণিত ভৌমিক
অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪ অরিন্দম দেবনাথ ▪ গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় ▪ কমলবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪ সুশান্ত কুমার রায় ▪ ড. উৎপল অধিকারী
অলংকরণ
মায়াসখা নন্দী ▪ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ▪ একপর্ণিকা ক্রিয়েটিভস