ছোটো গল্প
FREE SHIPPING IN INDIA
ছোটো গল্প
কলকাতা বন্দরে পৌঁছে দেখা গেল নৌকা বোঝাই সব জামাকাপড়ই ছেঁড়া। কথাটা ফরাসি প্রশাসনের কানে উঠল। তারা ব্যাপারখানা মোটেই সহজভাবে নিল না। ভাবল কোনও আধ্যাত্মিক বুজরুকি আছে বোধ হয়। গ্ৰেপ্তার করতে এল সাধুবাবাকে। এসে দেখল শিবমন্দিরের পাশে একটা হনুমান বসে। একটাই বসে। হনুমান সাধারণত একা থাকে না। দল বেঁধে থাকে। এখানে একটা কেন?
বাণীব্রত গোস্বামী
পাঁচিলের ওই-পারে বল পড়ে গেলে কেউ সাধারণত আনতে যায় না। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে টুবলুর। সবাই বলে, পাঁচিল টপকে নাকি ও-পারে গঙ্গার ধারে যেতে নেই। ওখানে ভাঙা শিবমন্দিরে নাকি কাকপন্ডিত থাকে। কে এই কাকপন্ডিত? কেনই-বা তার কাছে যেতে নেই? কী ভয় লুকিয়ে আছে সেখানে? টুবলুকে সবটা জানতেই হবে। আসলে এটা তো সব বাচ্ছা ছেলেমেয়েরই ধর্ম। কোনোকিছু বারণ করলে তাদের আগ্ৰহ সেই বিষয়ে বেড়ে যায় চোদ্দ গুণ। টুবলু তো আর জন্ম থেকেই এখানে থাকত না। ওর বাবা অঙ্কের মাস্টার। বদলি হয়ে এসেছেন এই চন্দননগর হাই স্কুলে। ঘরভাড়া নিয়েছেন গোঁসাইঘাটে। বাড়ির সামনেই খেলার মাঠ। মাঠের পাঁচিল পেরোলেই গঙ্গা। এখন কাকপন্ডিতের রহস্য তাকে উদ্ধার করতেই হবে। তার আগে শুনে নিতে হবে কাকপন্ডিতকে নিয়ে বহুদিন ধরে যেসব রটনা আর গল্পগুজব ছড়িয়ে আছে এই এলাকায়।
এবার এই কাকপন্ডিত নিয়ে দু-চার কথা বলি। মূলত জম্বু-কাশ্মীর উপত্যকার এক বিশেষ পন্ডিত সম্প্রদায়কে ‘কাকপন্ডিত’ বলা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই এই কাকপন্ডিতের। গঙ্গার ধারে একটা ভাঙা শিবমন্দির আছে। বটের ঝুরি আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে আছে বলে এখনও ভেঙে পড়েনি। চারপাশে ঘন হরেকরকম গাছগাছালি। বেশিরভাগই জংলি গাছ। কিছু ফলের গাছও আছে। তাই হনুমানের উৎপাতের সঙ্গে নানা জাতের পাখির কিচিরমিচির লেগেই আছে। তার ভেতরেই ওই মন্দিরে বাস করেন এক বুড়ো সাধু। কেউ বলে বয়স আড়াইশো, আবার কারও মতে সাড়ে তিনশো তো হবেই। তবে সমস্যা সেখানে নয়, অন্য জায়গায়। মুখ দিয়ে যাকে যা বলেন তা-ই ফলে যায়। তার মধ্যে বেশিরভাগই অমঙ্গলের কথা। যেহেতু কাকের ডাককে অমঙ্গল হিসেবে ধরা হয়, তাই এই সাধুর এখানে ওই নামই জুটেছে।
এই কাকপন্ডিতের পূর্বাভাসে ঘটে যাওয়া কিছু অমঙ্গলের ঘটনার উদাহরণ দিই। তাহলে ব্যাপারটা হয়তো কিছুটা বোঝা যাবে। একদিন গঙ্গা দিয়ে কলশি বোঝাই নলেনগুড় একটা নৌকো করে যাচ্ছিল। সাধুবাবাজি পাড় থেকে হাঁক দিলেন, “ও মাঝিভাই, কী নিয়ে যাও? গুড় নাকি?”
“কেন, দাঠাউর?”
“গুড় হলে একখান কলশি নামিয়ে দ্যাও দিইনি। বহুকাল হল এর স্বাদ ভুলে গেছি।”
“না দাঠাউর, এ-সবই ফাঁকা কলশি। এখন গুড় আনতে যাচ্ছি। ফেরার সময় বরং তোমারে একখান দিয়ে যাব।”
“আচ্ছা, তাই হবে’খন।”
খানিকক্ষণ পরে নৌকার মাঝি দেখে গুড়ের সব কলশি ফাঁকা। আবার নৌকো ঘুরিয়ে এসে কাকপন্ডিতের হাতে-পায়ে ধরে। কথা দেয়, আর কোনোদিন ভুলেও মিছে কথা বলবে না। চোখের সামনে গুড়ের কলশি আবার ভরে যায়। অবাক কাণ্ড! তারপর একখান গুড়ভরা কলশি বাবার পায়ের কাছে রেখে, আশীর্বাদ নিয়ে আবার রওনা দেয়।
তবে পরের ঘটনাটা আরও মারাত্মক! এতে তাঁর খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তখন ফরাসডাঙা থেকে ফরাসি শাসকরা ইউরোপে বস্ত্র রপ্তানি করত। সেরকমই একদিন বস্ত্র-ভরতি এক বড়ো বজরা গোঁসাইঘাটের সামনে দিয়ে গঙ্গা পেরিয়ে যাচ্ছিল। যথারীতি কাকপন্ডিত হাঁক পাড়লেন, “আমার গামছাখানা ছিঁড়ে গেছে। একখান গামছা হবে নাকি গো?”
“এসব ছেঁড়া জামাকাপড় গো সব সাধুবাবা। পরে ভালো পেলে দিয়ে যাব।”
“ঠিক আছে বাবা, তাই হবে।”
কলকাতা বন্দরে পৌঁছে দেখা গেল নৌকা বোঝাই সব জামাকাপড়ই ছেঁড়া। কথাটা ফরাসি প্রশাসনের কানে উঠল। তারা ব্যাপারখানা মোটেই সহজভাবে নিল না। ভাবল কোনও আধ্যাত্মিক বুজরুকি আছে বোধ হয়। গ্ৰেপ্তার করতে এল সাধুবাবাকে। এসে দেখল শিবমন্দিরের পাশে একটা হনুমান বসে। একটাই বসে। হনুমান সাধারণত একা থাকে না। দল বেঁধে থাকে। এখানে একটা কেন? চারদিকে কাকপন্ডিতকে খোঁজা হচ্ছে। ঝোপঝাড় জঙ্গল তন্নতন্ন করে খুঁজছে হাবিলদারের দল। কোত্থাও নেই লোকটা! হঠাৎ এক সাংঘাতিক কাণ্ড। হনুমানটা লালমুখো সাহেবের কোমর থেকে চামড়ার কভারের টিপ বোতামটা পটাং করে খুলে রিভালভারটা নিয়ে সোজা গাছের মগডালে। এ তো মহা মুশকিল! যন্তরটা নিয়ে খেলা করছে হনুমানটা। যদি গুলি ছুটে যায়! তখন তো কেলেঙ্কারি! পুলিশের দল ভয় পেয়ে মার দৌড়। কখন কোন দিক থেকে গুলি ঠিকরে এসে লাগবে, কে জানে বাবা! কিন্তু লালমুখো ফরাসি সাহেব তো আর নড়তে পারে না। রিভালভার হারিয়ে গেলে চাকরি নিয়ে টানাটানি হবে। বাধ্য হয়ে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে থাকে হনুমানটার কাছে। অনেকক্ষণ পর হনুমানটার কী মনে হল কে জানে, বন্দুকটা মাটিতে ফেলে দিল। কুড়িয়ে নিয়ে ধড়ে প্রাণ এল সাহেবের। তবুও কেমন একটা সন্দেহ হল যেন। এই হনুমানটাই ব্যাটা কাকপন্ডিত নয় তো? হলেও হতে পারে। ভারতবর্ষে সাধুসন্তরা নাকি অনেক কিছু করতে পারে। নানারকম ছদ্মবেশ ধরতে পারে। এই সাধুরও হয়তো সেরকম কোনও বিদ্যে জানা আছে। ব্যাটা হনুমান সেজে বসে নেই তো! বিজ্ঞানের কোনও যুক্তিই এই রহস্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারল না। তবে তারা ভয়ে বাধ্য হল সাধুবাবার মাসকাবারি খাবার ও সারাবছরের প্রয়োজনীয় জামাকাপড়ের সরকারি বন্দোবস্ত করতে। একদম পাকাপাকি ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। বহাল তবিয়তেই গঙ্গার ধারে তখন থেকেই থাকতেন এই কাকপন্ডিত।
এ-সবই লোকমুখে শোনা সব গল্প। আন্দাজ একশো বছর আগের। মানুষই প্রচার করে দিয়েছে এইসব অবিশ্বাস্য গল্পকথা। তবুও বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। তাই সবাই এড়িয়েই চলত ওঁকে। পারতপক্ষে গঙ্গার ওইদিকটায় কেউ মাড়াতে চাইত না। উনি পাড়ার ভেতরে এসে কিছু চাইলে সকলেই একবাক্যে দিয়ে দিত। তবে সে-চাহিদা ছিল খুবই যৎসামান্য। কখনও একমুঠো চাল, দুটো আলু বা কোনও একটা যে-কোনো ফল। নিজেই হাত পুড়িয়ে দুটো ফুটিয়ে খেতেন। আবার কখনও একটা ফল খেয়েই দিন কাটিয়ে দিতেন। জীবনধারণ ছিল অতীব সাদামাটা।
ঘটনাটা ঘটল নীলষষ্ঠীর আগের দিন। গঙ্গায় স্নান করতে গিয়েছিলেন হরেন মাস্টার। উনি প্রবর্তক স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক। গঙ্গার ধারে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল কাকপন্ডিতের সঙ্গে। সাধুবাবা হরেন মাস্টারকে দেখেই বলে উঠলেন, “মহাদেববাবাকে দুটো আম দিয়ে যাস তো।”
“কেন? শিবঠাকুর কি আম খায়? ওই আম তো যাবে তোমার পেটে!”
“তাই! ঠিক আছে। তাহলে তুই আম দিবি না, তাই তো?”
“না। আমি বিজ্ঞান পড়াই। তোমার কোনও বুজরুকি আমি বিশ্বাস করি না। ওসব ভয় তুমি অন্য লোককে দেখাবে।”
“ঠিক আছে বাবা। তুই তো পন্ডিত মানুষ। অনেক কিছু জানিস। কত কী বুঝিস! দেখিস আবার শিবের বাহন তোকে ভালোবেসে আদর না করে দেয়!”
কথাটায় খটকা লাগল হরেন মাস্টারের। কোনও উত্তর না দিয়ে উনি বাড়ির পথ ধরলেন।
সেদিনই সন্ধেবেলা হরেন মাস্টার মাঠে বসে হাওয়া খাচ্ছিলেন। হঠাৎ সাপে কাটল ওঁকে। খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে সে-যাত্রায় কপালজোরে প্রাণ রক্ষা হয়েছিল ওঁর। তবে কাকপন্ডিতকে নিয়ে ভয়টা আরও চারিয়ে গেল এলাকায় সবার মধ্যে।
এবার আবার টুবলুর কথায় ফিরে আসি।
হরেন মাস্টারের ঘটনাটায় জেদ চেপে গেল টুবলুর মাথায়। পুরো রহস্যটা ওকে ফাঁস করতেই হবে। টুবলু তো ঠিক করল, একদিন চুপিচুপি যাবেই কাকপন্ডিতের কাছে।
স্কুলে তখন গরমের ছুটি চলছে। বাবা দুপুরবেলা সাধারণত ছুটির দিনে টুবলুকে অঙ্ক করান। আগের স্কুলে ক্লাস এইট অবধি অঙ্কে বেশ ভালো নম্বর পেয়েই ক্লাসে বরাবর ফার্স্ট হত টুবলু। বাবার মতোই অঙ্কে মাথা। এখন দেখা যাক নতুন স্কুলে কী হয়!
টুবলুর বাবা ধীরেনবাবু সেদিন মাধ্যমিকের খাতার পাঁজা নিয়ে বসেছেন। টুবলু বাবার দেওয়া অঙ্কগুলো চটপট করেই উঠে পড়ল। চুপচাপ দরজায় কোনও আওয়াজ না করেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এল। রাস্তা একেবারে শুনশান। গ্ৰীষ্মের নিঝুম দুপুর। কাকপক্ষীতেও টের পেল না। টুবলু একেবারে চুপিসারে ভাঙা শিবমন্দিরের সামনে হাজির। সাধুবাবা তখন একটা মোটা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন। ঘুমোচ্ছেন। এই প্রচণ্ড গরম! গায়ে জামাটা পর্যন্ত রাখা যাচ্ছে না, তার মধ্যে লোকটা মোটা কম্বল গায়ে দিয়ে গভীরভাবে ঘুমোচ্ছে কী করে! টুবলু তো ভেবেই অবাক। আলতো করে ডাক দিল, “ও কাকপন্ডিত! ঘুমোচ্ছ নাকি?”
বার তিনেক ডাকতে হল বোধ হয়। ধড়মড় করে উঠে বসলেন কাকপন্ডিত। মুখে একরাশ বিরক্তি। টুবলুর দিকে তাকিয়ে অসন্তুষ্টি মেশানো একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, “কে রে তুই? বেশ ঘুমোচ্ছিলাম তপোবনে শুয়ে। জাগালি কেন?”
“তপোবন? সেটা আবার কোথায়?”
“সেটাও জানিস না? গোমুখের কাছে রে ব্যাটা। হিমালয়ে।”
“তুমি এখন হিমালয়ে ছিলে! তুমি তো এখানে!”
“ও তুই বুঝবি না রে ব্যাটা। শরীরটা শুধু এখানে দেখছিস। আত্মাটা? যাক গে ছাড়। তবে সাবধানে থাকিস। খুব শিগগিরই তুই কিন্তু জলে ডুববি। এখন ভাগ এখান থেকে।”
টুবলু মনে হয় এবার একটু ভয় পেল। এক ছুট্টে পালাল ওখান থেকে। ভাবতে লাগল, সে তো গঙ্গাতে কোনোদিন নামেই না। স্নানও করে না গঙ্গায়। নৌকাতেও কখনও ওঠে না। তাহলে জলে ডুববে কী করে! তবুও কাকপন্ডিত বলেছে যখন, মনে হয় একটু সাবধানে থাকাই উচিত। বাড়িতে কাউকেই বলা যাবে না ব্যাপারটা।
দিন পনেরো যেতেই টুবলুর মাথা থেকে ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবেই বেরিয়ে গেল। পড়ার চাপও বাড়তে লাগল। সামনেই হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষা। পরীক্ষা নিয়েই তখন ব্যস্ত। ভয়ংকর ঘটনাটা ঘটল অঙ্ক পরীক্ষার দিন। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর অঙ্ক কষতে শুরু করে দিল টুবলু। কিন্তু তিনটে অঙ্ক নিয়ে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। প্রতিটিতেই দশ নম্বর। মানে মোট তিরিশ। না পারলে তো বেশ মুশকিল!
প্রথম অঙ্কটা ছিল পাটিগণিতের। একটা নদীর স্রোত আর নৌকোর অঙ্ক। স্রোতের দিকে আর বিপরীত দিক নিয়ে এক জটিল অঙ্ক। টুবলুর মাথায় কিছুতেই সূত্রটা খেলছে না। দ্বিতীয় অঙ্কটা পরিমিতির। একটা পুকুরের ক্ষেত্রফলের অঙ্ক। ব্যাসার্ধ, পরিধি, গভীরতা সবই দেওয়া আছে, তবুও ঠিক বাগে আনতে পারছে না টুবলু। অথচ এরকম অনেক অঙ্ক বাবার কাছে করেছে বাড়িতে। তৃতীয়টা সত্যিই একটু কঠিন। সমুদ্রের ওপরে একটা নৌকো ভাসছে। জলের পাঁচশো ফুট নীচে একটা মাছের চোখে সেই নৌকোটার প্রতিফলন নিয়ে একটা ত্রিকোণমিতির অঙ্ক। বিষয়টা বেশ জটিল। কঠিন অঙ্ক। তবুও টুবলুর মতো ভালো ছেলে হয়তো চেষ্টা করলে পারত। কিন্তু আগের দুটো অঙ্কে মাথাটা একদম গুলিয়ে গেছে। ঘাঁটা মাথায় এটা কোনোমতেই হবে না। আর মাত্র দশ মিনিট। তার থেকে বাকি কষা অঙ্কগুলোয় চোখ বুলিয়ে নেওয়া ভালো। যাতে কোনও সামান্য ভুলত্রুটিও না থাকে। অন্তত সত্তরটা নম্বর তো পাকাপোক্ত হোক।
মনখারাপ নিয়েই স্কুল থেকে বাড়ির পথ ধরল টুবলু। পায়ের বুটের ডগায় একটা লাল ইট, অন্যমনস্কভাবে ফুটবলের মতো শট মারতে মারতে নিয়ে হাঁটছে। পায়ের জুতোটা অল্প রাস্তায় ঘষে চলছে। হঠাৎ একটা বিদ্যুৎ খেলে গেল মাথায়। তিনটে অঙ্কেই ছিল নদী, পুকুর, সমুদ্র! তার মানে তো জল। ডুবে যাওয়া মানে তো শুধু ডুবে মরে যাওয়া নয়। পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়াও তো একরকম ডোবা। কাকপন্ডিতের চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে গোটা চারেক আম আর ফ্রিজে একটা মিষ্টির বাক্স ছিল, তাই নিয়ে ছুটল কাকপন্ডিতের কাছে টুবলু। দূর থেকে ওকে দেখেই মুচকি হাসতে লাগলেন কাকপন্ডিত।
“কী হয়েছে রে ব্যাটা?”
“বাবা তুমি এগুলো খাও। তোমাকে সেদিন ঘুম থেকে ডেকে তোলা আমার সত্যিই অন্যায় হয়ে গেছে। আমাকে দয়া করে মাপ করে দাও।”
“আয় ব্যাটা, কাছে আয়।”
টুবলু কাছে যেতেই কাকপন্ডিত ওর মাথায় হালকা একটা চাপড় মেরে বললেন, “যাঃ, অঙ্ক নিয়ে আর তোর কোনোদিন চিন্তা নেই। অঙ্কে কেউ কোনোদিন তোকে আর টপকাতে পারবে না।”
টুবলু আর কোনোদিন জীবনে অঙ্কে কম নম্বর পায়নি। মাধ্যমিকেও একশো পেয়েছিল। তবে পরিশ্রমও করেছিল তার জন্য প্রচুর। শুধু মাঝে-মধ্যে কাকপন্ডিতকে খাবারদাবার দিয়ে আসত লুকিয়ে। বিজ্ঞান যেখানে শেষ, দর্শনের সেখানে শুরু। আর দর্শনের পান্ডিত্যের বাইরেও যে বহাল তবিয়তে রাজত্ব করে, তার নাম ‘অলৌকিক’।
কিশোর ঘোষাল ▪ পুষ্পেন মণ্ডল ▪ রঞ্জন দাশগুপ্ত ▪ শাশ্বত কর
শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য ▪ দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য ▪ মৌসুমী রায় ▪ অদিতি ভট্টাচার্য ▪ অভিষেক ঘোষ ▪ সুস্মিতা কুণ্ডু ▪ সবিতা বিশ্বাস ▪ বুমা ব্যানার্জী দাস ▪ শংকর লাল সরকার ▪ বাণীব্রত গোস্বামী ▪ সহেলী রায় ▪ অমিয় আদক ▪ সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত ▪ সুতপা সোহহং
বদ্রীনাথ পাল ▪ শ্যামাচরণ কর্মকার ▪ দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী ▪ স্বপন কুমার বিজলী ▪ সুব্রত দাস ▪ অর্ণব ভট্টাচার্য ▪ সুজাতা চ্যাটার্জী ▪ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস ▪ মধুমিতা ভট্টাচার্য ▪ কণিকা দাস ▪ সৌমেন দাস ▪ নীলেশ নন্দী
রম্যাণী গোস্বামী ▪ দীপঙ্কর চৌধুরী ▪ বিশ্বদীপ সেনশর্মা ▪ রণিত ভৌমিক
অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪ অরিন্দম দেবনাথ ▪ গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় ▪ কমলবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪ সুশান্ত কুমার রায় ▪ ড. উৎপল অধিকারী
অলংকরণ
মায়াসখা নন্দী ▪ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ▪ একপর্ণিকা ক্রিয়েটিভস
শিবশঙ্কর ভট্টাচার্যের অসামান্য লেখায় ও আঁকায় কিশোর গল্প সংকলন।
গুণময় রায় বিজ্ঞানী মানুষ। নিজের পরিচয় দেন ‘ইনভেনটর’ বলে। বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও তুখোড়। আবার ভারতীয় পুরাণ, ইতিহাস এবং পুরাতাত্ত্বিক বিষয়েও তাঁর গভীর জ্ঞান। কখনও নিজের মনোজগত, কখনো-বা প্রজন্মবাহিত স্মৃতির সরণিতে অক্লেশে ঘুরে বেড়ান ‘গুণময় দ্য গ্রেট’, আর পাঠকেরাও সুযশ মিশ্রের জবানিতে স্বাদ পায় সেই অতুলনীয় অ্যাডভেঞ্চারগুলির।