ছোটো গল্প
15% OFF * FREE SHIPPING
ছোটো গল্প
বাচ্চাগুলোর কাছে মাস্টার আর দিদিমণিরাই মা-বাবা। বাচ্চাগুলো স্কুলে আসার পর গরম, শীত বা পরবের ছুটিতেও বাড়িতে যেতে চায় না। ছোট্ট চিলতে ঘরে সব বাচ্চাদের সঙ্গে গুটিসুটি মেরে শুয়ে, সকালে মাড়-ভাত, দুপুরে ফ্যানা ভাত আর রাতে জাউ ভাত খেয়ে বই আর খেলায় মত্ত থাকা পছন্দ ওদের। তার থেকেও বড়ো ভয়, বাবা-মা যদি আর ফিরিয়ে না দিয়ে যায় স্কুলে!
অরিন্দম দেবনাথ
“বুঝলি, তোর মা নিশ্চয়ই কোনও কাজে আটকে গেছে। ঠিক তোকে নিতে আসবে, দেখবি!”
“আমার মা আর আসবে না। ভালু পাহাড়ের ভালু মাকে খেয়ে নিয়েছে।”
“ধুস, ভালু কি আর মানুষ খায়?”
“তাহলে শেয়ালে খেয়ে নিয়েছে।”
“শেয়াল কেন খাবে তোর মাকে?”
“তাহলে মা কেন আসে না? বাবাকেও তো সাপে খেয়েছে!”
টান করে ঝোলা দড়িটা থেকে সুতো দিয়ে ঝুলতে থাকা সার সার বিস্কুটগুলো ঝোড়ো হাওয়ায় দুলছে। তারই একপাশে দাঁড়িয়ে গৌতমকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চলেছে ইপিল। সকাল থেকেই মা মা করে কেঁদে চলেছে ছোট্ট ছেলেটা।
আজ ইপিলদের স্কুলে স্পোর্টস। স্কুল মানে বনবিভাগের জমিতে মাটির দেওয়ালের একটা লম্বা টিনের চালের ঘর—লম্বায় আশি ফুট আর চওড়ায় ফুট বারো। স্কুলের পাশ দিয়ে চলে গেছে একটা ফুট আটেক চওড়া পিচের রাস্তা। কতগুলো লম্বা বাঁশ আর গাছের গুড়ি দিয়ে খানিক বেড়া মতো করে রাস্তাটা থেকে আড়াল করার চেষ্টা লম্বা ঘরটাকে। জানালার কপাটগুলো ঠিক ঠিক বন্ধ হয় না, কারণ উইপোকায় নষ্ট করে দিয়েছে জানালার কাঠামো। মাঝে মাঝে হাতি চলে আসে ঘরের কাছে। তখন টিন পিটিয়ে, মশাল জ্বালিয়ে হাতিগুলোকে তাড়িয়ে দেয় বনদপ্তরের লোকজন। শেয়ালের দল তো রাত হলেই গান গাইতে শুরু করে স্কুল ঘরের বাইরে। বৃষ্টি আর গরমের সময় ঘরের মাটির দেওয়ালে ইঁদুরে করা গর্ত নিয়মিত নজর করে বুজিয়ে দিতে হয়। কালাচ সাপের বড়ো উপদ্রব এই অঞ্চলে। ইঁদুরের গন্ধ পেলেই গর্ত দিয়ে পিছু নেয় এরা। এই অঞ্চলে প্রতিবছর অনেক লোক সাপের কামড়ে মারা যায়।
এই ঘরটাই আস্তানা গৌতম, ইপিল, নন্দন, অজিতের মতো শ-খানেক বাচ্চার। বয়স পাঁচ থেকে দশ। জঙ্গলের মাঝে এটা ওদের আবাসিক স্কুল। বহুদূরের গ্রামে ওদের বাড়ি। বাবা-মা স্কুলে রেখে গেছে পড়াশুনা শেখার আশায়।
এ কোনও সরকারি স্কুল নয়। লোকের দানে চলা স্কুলে যারা পড়ায়, তারাও ভালোবেসে বিনি পয়সায় আদর করে পড়ায়। স্কুলের শিক্ষকরা আশেপাশের গ্রামের ছেলে-ছোকরারা কেউ বারো ক্লাস পাশ, কেউ-বা গ্র্যাজুয়েট। চাষবাসের মাঝে সময় বের করে স্কুলের জন্য নিয়মিত সময় দেয় এরা। কোনও কিছু পাওয়ার আশায় নয়, মনের আনন্দ আর কিছু করার তাগিদে।
মাসে বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য চাল, রান্নার কাঠ আর একশোটা টাকা দিয়ে হয় পড়ুয়াদের বাবা-মাকে। অনেক বাবা-মাই চাল, কাঠ আর খানিক শাকসব্জি দিয়ে গেলেও একশো করে টাকা দিতে পারে না। ফলে লজ্জায় অনেক বাবা-মাই বাচ্চাদের সঙ্গে দেখাও করতে আসে না মাসে মাসে। বাচ্চাগুলোর কাছে মাস্টার আর দিদিমণিরাই মা-বাবা। বাচ্চাগুলো স্কুলে আসার পর গরম, শীত বা পরবের ছুটিতেও বাড়িতে যেতে চায় না। ছোট্ট চিলতে ঘরে সব বাচ্চাদের সঙ্গে গুটিসুটি মেরে শুয়ে, সকালে মাড়-ভাত, দুপুরে ফ্যানা ভাত আর রাতে জাউ ভাত খেয়ে বই আর খেলায় মত্ত থাকা পছন্দ ওদের। তার থেকেও বড়ো ভয়, বাবা-মা যদি আর ফিরিয়ে না দিয়ে যায় স্কুলে!
রাস্তার ও-পাশে এক বিশাল ঘাসজমি। নানা গাছে ঘেরা বিশাল এলাকাটা নয় নয় করেও এক বর্গকিলোমিটার হবে। দূরদূরান্তের গ্রামের লোকেরা আসে নির্জন পাহাড়ঘেরা ঘাসজমিতে গোরু-মোষ-ছাগল ভেড়া চড়াতে। খুব বেশি গ্রাম যে আশেপাশে আছে তাও নয়। একটা গ্রাম থেকে আর একটা গ্রাম কম করেও কয়েক কিলোমিটার দূর। পাহাড়ি অঞ্চল। গরমকালে জল পাওয়াটা বেশ কষ্টকর। অনেক পথ হেঁটে পাহাড়ের খাদ বেয়ে চলা একচিলতে ঝোরার জল বালতি-কলশী ভরে টেনে নিয়ে যেতে হয় প্রতিদিন। এখন অবশ্য গ্রামে একটা করে গভীর নলকূপ বসেছে সরকার থেকে, কিন্তু মাঝে-মাঝেই সেগুলো অচল হয়ে পড়ে।
পাহাড়ের গায়ে জঙ্গলের মাঝে খানিক করে চাষের জমি। কোনও জমিতে বছরে একবার ফসল হয়, কোনও জমিতে-বা দুই। জঙ্গলের কাঠ-কুটো কুড়িয়ে রান্না চলে। রেশনে খানিক বিনামূল্যে চাল-গম আটা পাওয়া যায়, আর জমিতে যা ফসল হয় তাতে সারাবছরের খোরাকি চলে।
শীতকাল। ঠান্ডাটা এ-বছর পড়েও পড়েনি। তবে যা ঠান্ডা তাতেই কেঁপে উঠছে মিটার পঞ্চাশ দূরে পেছনে হাত দিয়ে দৌড়ের জন্য প্রস্তুত বাচ্চাগুলো। অধিকাংশের গায়েই শীত পোশাক বলে কিছু নেই। খড়ি-ওঠা খালি পা চুন দিয়ে লম্বা কাটা দাগের মাঝে মাটি ঘষছে বাঁশির শব্দ শোনার অপেক্ষায়।
অনেক বাচ্চার বাব-মাই আসে স্কুলের স্পোর্টস দেখতে। একটা ছোটোখাটো মেলা বসে মাঠ ঘিরে। চপ-মুড়ি-আলুরদম বিক্রি করে কয়েকজন। আর সস্তার খেলনাও পাওয়া যায়। গতবছর মুরগির লড়াই হয়েছিল মেলার মাঝে। এবার কোনও মেলা হয়নি; আসেনি প্রায় কোনও বাচ্চার বাবা-মাই। আসেনি ইপিল বা গৌতমের বাড়ির কেউ। ফসল ভালো হয়নি এবার, তাই কোনও বাব-মারই বাচ্চাদের মেলা থেকে কিছু কিনে দেবার মতো সামর্থ নেই।
সেই ভোর থেকে বাচ্চারা প্রার্থনা সেরে মাড়-ভাত খেয়ে তৈরি হয়ে ছিল মাঠে যাবার জন্য। বাচ্চাগুলো দারুণ নিয়ম মেনে চলে। শিক্ষকদের অনুমতি ছাড়া স্কুল চত্বরের বাইরে যায় না। স্কুলের পাশের রাস্তা দিয়ে গাড়ি প্রায় না চললেও রাস্তার ও-পারে যায় না কেউ। মুখে সাঁওতালি ভাযায় কথা বললেও এরা পড়াশুনা করে বাংলা ভাযায়। ভাষা, অঙ্ক, পরিবেশ বিজ্ঞান ছাড়াও ইংরেজি শেখে এরা। প্রতিমাসে দূর শহর থেকে কয়েকজন মানুষ এসেও পড়িয়ে যায় এদের। যখন দূর শহরের মানুষগুলো আসে তখন আনন্দের সীমা থাকে না এদের। কত গল্প শুনিয়ে ছবি দেখিয়ে পড়ায়, ছবি আঁকতে শেখায়। নানা জিনিস বানাতে শেখায় বাচ্চাদের। যেমন মুখোশ, কাগজের নৌকো আরও কত কী!
বাঁশির শব্দ শুরু হতেই মাঠের প্রান্ত থেকে কষে দৌড় লাগায় বাচ্চাগুলো। মাস্টারমশাই পইপই করে বলে দিয়েছেন, বিস্কুটে হাত লাগানো যাবে না। হাত পিঠের পেছনে করে রাখতে হবে। বিস্কুট মুখে নিয়ে যেখানে দৌড় শেষ হচ্ছে, সেখানে যারা আগে যেভাবে পৌঁছবে তারাই ফার্স্ট, সেকেন্ড আর থার্ড হবে।
দড়ি থেকে ঝোলা বিস্কুট মুখে নেওয়া সহজ নয়। প্রচণ্ড হাওয়ায় বিস্কুটগুলো দুলছে, গোল বড়ো মারি বিস্কুটগুলো দাঁতে কামড়াতে গেলেই সরে সরে যাচ্ছে গালের পাশে।
“অ্যাই, হাত দিয়ে ধরবে না।” সুতোর পাশে দাঁড়ানো এক মাস্টারমশাই চিৎকার করে ওঠেন। শুনে ইপিলকে আঁকড়ে থাকা গৌতম হেসে ওঠে। সকাল থেকে কাঁদতে থাকা গৌতমকে হেসে উঠতে দেখে ওকে কোলে তুলে নেয় ইপিল।
“তুই দৌড়লি না কেন ভাই?”
“দিদি, আমায় মায়ের কাছে নিয়ে চল।”
“তোর মা তো আসেনি ভাই, আমার মাও নয়।”
“চল দিদি, আমরা মায়ের কাছে যাই।”
“যাব কী করে ভাই, সে তো অনেক দূর। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আমি কি সে-পথ চিনি? দেখিস তোর মা কাল ঠিক আসবে, আমার মাও!”
“আসবে না রে দিদি, মাকে ভালুতেই খেয়েছে।”
কোনও উত্তর করে না ইপিল। ওরও মাঝে মাঝে মনে হয় গৌতমের মাকে নির্ঘাত ভালুতে খেয়েছে, না-হলে ওকে স্কুলে দিয়ে যাবার পর কেন একদিনও আসেনি ওর মা।
ছোট্ট গৌতম ক্লাস ওয়ানে পড়ে। ওকে ওর মা স্কুলে ভরতি করে দিয়ে যাবার পর আর আসেনি ওকে দেখতে। গৌতমের বাবা নেই, জঙ্গলে কাঠ কাটতে গিয়ে সাপের ছোবল খেয়ে মারা গেছে অনেক আগেই। ক্লাস ফোরের ইপিল শুনেছে, ওর মা মাসে যে একশো টাকা করে দিতে হয়, সেটা জোগাড় করতে পারছে না বলে লজ্জায় স্কুলে আসে না। ওদের বাড়ি স্কুল থেকে অনেক দূরে, সেই ভালু-পাহাড়ের ও-পারে। ইপিলদের গ্রাম থেকে একটা পায়ে হাঁটা রাস্তা চলে গেছে ভালু-পাহাড়ের নীচ দিয়ে। সকালে হাঁটা শুরু করলে সেই গ্রামে পৌঁছতে প্রায় দুপুর হয়ে যায়, এত দূর! ইপিলদের গ্রামে যেতেও স্কুল থেকে একঘণ্টার ওপর হাঁটতে হয়।
গৌতমের মা আসে না বলে ইপিলের মা ওকে এর আগের গরমের ছুটিতে ইপিলের সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে গেছিল। ইপিলের মায়ের পাশে দুজন ঘুমোত।
ইপিলের বেশ মনে আছে গৌতমকে ওর মার এই আবাসিক স্কুলে ছেড়ে যাবার সময়কার কথা। দুপুরবেলা স্নান করিয়ে খাইয়ে-দাইয়ে ওর মা যেই ওকে স্কুলে রেখে চলে যাবে বলেছিল, অমনি আর ও মার কোল থেকে নামেনি। স্কুলের এক দিদিমণি ওকে জোর করে টেনে নিয়েছিল নিজের কোলে। গৌতমের মা যেই না স্কুলের বাঁশের বেড়ার দরজা খুলে পিচের রাস্তায় পা দিয়েছে, তখনই গৌতম এক ঝটকায় দিদিমণির কোল থেকে নেমে ছুট লাগিয়েছিল রাস্তার দিকে। স্কুলের দরজার কাছে আগে থেকেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ক্লাস থ্রি আর ফোরের বাচ্চারা। ওরা জানত কী করতে হবে। কারণ, ক্লাস ওয়ানের বাচ্চারা যেই টের পায় তাদের মা-বাবারা স্কুলে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে থাকার জন্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে, সে-সময় প্রায় সবাই ছুট লাগায় মা-বাবার সঙ্গে ফিরে যাবে বলে।
গৌতম স্কুলের দরজার কাছে পৌঁছতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে ঘরে নিয়ে এসেছিল সবাই মিলে। তারপর খানিক খেলতে খেলতে মাদুরের ওপর ঘুমিয়ে পড়েছিল ছেলেটা।
***
মাঠের পাশে একটা গাছের তলায় পায়ের ফাঁকে মুখ গুঁজে বসে ছিল গৌতম অনেকক্ষণ ধরে। সারা গায়ে ধুলোমাখা। খেলার দিকে ওর মনে নেই। ওকে ডেকে ডেকেও কেউ দৌড়োতে নিতে পারেনি। মাঠের কোনায় ডাঁই করা থালা, গ্লাস, বাটি, স্কুল ব্যাগ এইসব পুরস্কারের দিকে ওর মন নেই। খালি থেকে থেকে যে-পথ ওদের গ্রামের দিকে গেছে, সেদিকে খানিক ছুটে গিয়ে আবার ফিরে এসে গাছের তলায় বসে পড়েছে। ধুলোমাখা মুখে চোখের জল, খানিক পরিষ্কার টানা দাগ কেটে দিয়েছে।
আজ খেলার মাঠেই খাওয়াদাওয়া। বালতিভরা জল টেনে এনেছে ক্লাস থ্রি আর ফোরের বাচ্চারা। মাঠের এক কোনায় কাঠের আগুনে হাঁড়ি চাপিয়ে রান্না হয়েছে ডাল, ভাত আর ডিমের ঝোল। শালপাতায় খাওয়া হবে বলে কাউকে থালা নিয়ে আসতে হয়নি। খানিক আগেই গাড়িতে করে দূর শহরের এক স্যার এসেছেন সবার জন্য কমলালেবু, কেক আর চকোলেট নিয়ে। লাইন দিয়ে সবাই সে-সব খাবার নিলেও যায়নি গৌতম। ইপিল ওর খাবার নিয়ে এসে অনেক চেষ্টা করেও খাওয়াতে পারেনি।
“জানিস ভাই, আমাদের তাড়াতাড়ি খেয়ে খেলা শেষ করে স্কুলে ফিরে যেতে হবে বলছে স্যাররা। অনেক হাতি নাকি এসেছে ওদিকের ঝোরার কাছে।”
“আসুক হাতি। আমি স্কুলে যাব না, আমি মার কাছে যাব।”
“দেখ ভাই, আজ হবে না। আর একটু পরেই অন্ধকার হয়ে যাবে। আমার মা এলে তোকে তোর মার কাছে নিয়ে যেতে বলব।”
***
ঝোরার দিকে থেকে হাতির ডাক ভেসে আসছে সমানে। হুলা পার্টি এসে হাজির হয়েছে হাতিগুলোকে পটকা ফাটিয়ে, টিন বাজিয়ে ভয় দেখিয়ে ধানক্ষেত থেকে সরিয়ে জঙ্গলের গভীরে নিয়ে যাবার জন্য। তাড়াতাড়ি হাতিগুলোকে সরিয়ে না দিতে পারলে ধানের দফারফা করে দেবে বিশাল হাতির দল খানিক সময়ের মধ্যে।
বাচ্চাগুলোকে খেলার মাঠ থেকে তাড়াতাড়ি করে স্কুলে নিয়ে আসা হয়েছে খানিক আগেই। স্কুলের চারপাশের অনেকটা জায়গা জুড়ে ছোটো ছোটো পাথরের টুকরো ছড়িয়ে রাখা। হাতি কুচি পাথরের ওপর সহজে পা ফেলে না, তাই স্কুলটা হাতির থেকে খানিক নিরাপদ।
সবাই মাঠ থেকে স্কুলে ফিরলেও ফেরেনি ইপিল আর গৌতম। তন্নতন্ন করে মাঠের আশেপাশে খুঁজেও সন্ধান পাওয়া যায়নি বাচ্চা দুটোর। আশেপাশের গ্রাম থেকে ডেকে আনা হয়েছে অনেক লোকজন। জঙ্গলে বাচ্চাগুলোকে খুঁজতে ঢুকবে ওরা। সবার ভয় হাতিগুলোর কাছে না চলে যায় ওরা। যদিও পালে আছে হাতিরা। সচরাচর পালে থাকলে কাউকে আক্রমণ করে না এরা। ক্ষেতের ফসল খেয়ে সব তছনছ করে চলে যায় জঙ্গলের অন্য অংশে।
অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে দ্রুত। ঠান্ডাটাও জাঁকিয়ে নামছে কুয়াশার সঙ্গে। চাদর-মুড়ি দেওয়া গ্রামের লোকজনের হাতে জ্বলে উঠছে একের পর এক মশাল। লম্বা ঘরে টিমটিম করে জ্বলছে দুটো সৌরশক্তি চালিত এলইডি বাল্ব। ঘরের মধ্যে কম্বল মুড়ি দিয়ে বাচ্চাগুলো কেঁদে চলেছে ইপিল আর গৌতমের জন্য। হাতিতে ওদের ভয় নেই, ভয় ভাল্লুকে। এই জঙ্গল ভাল্লুকের আস্তানা। ওরা শুনেছে ভাল্লুকে মানুষ খায়।
স্কুলের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে একদল লোক। কারা কোন দিকে খুঁজতে যাবে চলছে তারই আলোচনা।
লাল টকটকে গোল সূর্যটা দূর পাহাড়ের কোলে নেমে যাচ্ছে দ্রুত। আচমকা সেই লাল সূর্যের বুকে ফুটে উঠল তিনটে কালো বিন্দু—ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে রেখার রূপ নিচ্ছে; শাড়ি পরা এক মহিলা—দু-হাতে ধরা দুই শিশু।
শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য ▪️ অংশু পাণিগ্রাহী ▪️ রম্যাণী গোস্বামী ▪️ অরিন্দম দেবনাথ ▪️ সুব্রত দাস ▪️ বাণীব্রত গোস্বামী ▪️ এণাক্ষী কয়াল মণ্ডল ▪️ কিশোর ঘোষাল ▪️ মঞ্জুশ্রী ভাদুড়ি ▪️ সায়ন্তনী পলমল ঘোষ ▪️ সংঘমিত্রা রায়
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪️ অমিত চট্টোপাধ্যায় ▪️ অর্ণব ভট্টাচার্য ▪️ বদ্রীনাথ পাল ▪️ স্বপনকুমার বিজলী ▪️ বসন্ত পরামাণিক ▪️ মলয় সরকার ▪️ মানস চক্রবর্তী ▪️ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস ▪️ নীলেশ নন্দী ▪️ পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ▪️ রানা জামান ▪️ রূপসা ব্যানার্জী ▪️ সজল বন্দ্যোপাধ্যায় ▪️ শক্তিপদ পণ্ডিত ▪️ সৌমেন দাস ▪️ সুজাতা চ্যাটার্জী ▪️ সুমিত্রা পাল ▪️ তাপস বাগ ▪️ আলমগীর কবির ▪️ রমিত চট্টোপাধ্যায়
বুমা ব্যানার্জী দাস ▪️ মেঘনা নাথ ▪️ শাশ্বত কর ▪️ সুমন সেন ▪️ রণিত ভৌমিক
অরিন্দম ঘোষ ▪️ অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় ▪️ রাখি পুরকায়স্থ
কেয়া চ্যাটার্জী ▪️ দীপক দাস ▪️ ড. উৎপল অধিকারী ▪️ সুদীপ ঘোষাল
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ
বিশ্বদীপ পাল ▪️ অঙ্কিতা নন্দী ▪️ সুজাতা চ্যাটার্জী ▪️ বুমা ব্যানার্জী দাস ▪️ পুণ্ডরীক গুপ্ত ▪️ স্রবন্তী চট্টোপাধ্যায় ▪️ প্রবাহনীল দাস ▪️ সায়ন্তনী পলমল ঘোষ ▪️ সুমন দাস ▪️ সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী